সুন্দর বনের আয়তন কত - সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা

প্রিয় বন্ধুরা সুন্দর বনের আয়তন কত? এ বিষয়ে অনেকেই জানতে চাই। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা সুন্দর বনের আয়তন কত এবং সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা করব। সুন্দরবন বাংলাদেশ এবং ভারতের কিছু অংশ নিয়ে অবস্থিত কিন্তু আমরা অনেকেই আছি যারা সুন্দর বনের আয়তন কত তা জানি না।

আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে সুন্দর বনের আয়তন কত এবং সুন্দরবনের অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে সুন্দর বনের আয়তন কত ও সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা জেনে নেওয়া যাক।

কনটেন্ট সূচিপত্রঃ সুন্দর বনের আয়তন কত - সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা

সুন্দর বনের আয়তন কত - সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থাঃ ভূমিকা

প্রিয় বন্ধুরা আমরা সকলেই জানি যে বাংলাদেশের একমাত্র বনাঞ্চল হলো সুন্দরবন। যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলের সুন্দরবন অবস্থিত। বাংলাদেশ এবং ভারতের কিছু অংশ নিয়ে সুন্দরবন অবস্থিত। আজকে আমরা সুন্দর বনের আয়তন কত সম্পর্কে জানব। তার সাথে সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবো। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে সুন্দর বনের আয়তন কত তা জেনে আসি।

সুন্দর বনের আয়তন কত

প্রিয় বন্ধুরা আমাদের এই পোষ্টের মূল আলোচনার বিষয় হলো সুন্দর বনের আয়তন কত সম্পর্কে জানা। সুন্দরবন হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন। একে লবণাক্ত বনাঞ্চল বলা হয়। সুন্দরবনের মোট আয়তন হল প্রায়ই ১০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। যার কিছু অংশ বাংলাদেশ এবং কিছু অংশ ভারতে অবস্থিত। সুন্দরবনের ৬,০১৭ বর্গ কিলোমিটার বাংলাদেশে অবস্থিত।

আরো পড়ুনঃ ওয়েবসাইট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায় তা জেনে নিন

বাংলাদেশের খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাট পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার অংশ নিয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবন অবস্থিত। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা উত্তর 24 পরগনা জেলা নিয়ে গঠিত। আশা করি সুন্দরবনের আয়তন কত তা জানতে পেরেছেন।

সুন্দরবনের দ্বীপের নাম

প্রিয় বন্ধুরা আমরা ইতিমধ্যে সুন্দরবনের আয়তন কত সে সম্পর্কে আলোচনা করেছি এখন আমরা সুন্দরবনের দ্বীপের নাম গুলো জানব। সুন্দরবন অসংখ্য দ্বীপ রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি দ্বীপের নাম আমরা নিচে উল্লেখ করছি। তাহলে চলুন সুন্দরবনের দ্বীপের নাম সম্পর্কে জেনে নেই।

ঘোড়ামারা দ্বীপ হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সুন্দরবন এলাকায় অবস্থিত একটি দ্বীপ। পৃথিবীর সবথেকে বড় ম্যানগ্রোভ বনের ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ১০২ টি দ্বীপ রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো কলস দ্বীপ। এই দ্বীপটি ভারতে অবস্থিত। অন্যটি হলো পাখিরালয়। লোহাচড়া দ্বীপ, নিউমুর দ্বীপ। আরও অসংখ্য ছোট-বড় দ্বীপ রয়েছে সুন্দর বনে। 

সুন্দরবনের উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য

সুন্দরবনের উদ্ভিদ এর কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেগুলো অন্য কোন উদ্ভিদের নেই। আজকের এই পোস্টে আমরা ইতিমধ্যে সুন্দর বনের আয়তন কত সম্পর্কে জেনেছি। এখন আমরা সুন্দরবনের উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য কি এগুলো জানব।

সুন্দরবনের উদ্ভিদগুলো ছোট হয়ঃ

বিশ্বের অন্যান্য বন গুলোতে অনেক বড় বড় গাছ দেখা যায় কিন্তু সুন্দরবনের গাছগুলো উচ্চতায় অন্যান্য গাছের তুলনায় ছোট হয়ে থাকে। এবং প্রায় সকল গাছের উচ্চতা সমান হয়ে থাকে। সুন্দরবনের গাছগুলো মাটির উপর থেকে পানি ও পুষ্টি উপাদান সংগ্রহ করে মাটির গভীরে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না তাই গাছের শিকড় মাটির উপরিভাগে থাকে।

গাছের বীজের অঙ্কুরিত হয়ঃ

সুন্দরবনের কিছু কিছু উদ্ভিদে ফল গাছে থাকা অবস্থায় অঙ্কুরিত হয় এবং গাছের ওপরে লম্বা শিকড়ের মত অংশের হয়ে থাকে। এটি সুন্দরবনের বেশিরভাগ গাছের বৈশিষ্ট্য।

আরো পড়ুনঃ মেয়েদের ঘরে বসে আয় করার ২০ টি উপায় - নারীদের ঘরে বসে কাজ

লবণাক্ত পানিতে বেঁচে থাকাঃ

যেহেতু সুন্দরবন সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত সেখানকার মাটিতে থাকা পানি লবণাক্ত হয়ে থাকে। তাই সুন্দরবনের কাজগুলো লবণাক্ত পানিতে বেঁচে থাকতে পারে। এখানকার গাছের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে তার মধ্যে এটি অন্যতম। গাছ গুলো বাদ দিয়ে শুধু পানি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করে।

সুন্দরবনের গাছগুলো সারাবছর সবুজ থাকেঃ

সুন্দরবনের গাছগুলোর বৈশিষ্ট্যের মধ্যে অন্যতম হলো এখানকার গাছগুলোর সারা বছর থাকে।

সুন্দরবনের উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নাম

আমরা জানি যে সুন্দরবনের প্রধান কাজ হল সুন্দরী গাছ। সুন্দরী গাছের নাম অনুযায়ী সুন্দরবনের নামকরণ করা হয়েছে। সুন্দরবনের সুন্দরী গাছ ছাড়াও অনেকগুলো গাছপালার রয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। তার মধ্যে সবথেকে অন্যতম হলো সুন্দরী গাছ। সুন্দরী গাছের জন্য সুন্দরবন বেশি বিখ্যাত।

সুন্দরী গাছের পাতা ছোট আকৃতির ফুল হলুদ বর্ণের। একটি পূর্ণবয়স্ক সুন্দরী গাছের গড় উচ্চতা প্রায়ই ৭৫ ফুট। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে এই গাছ দেখতে পাওয়া যায়। বাংলাদেশ এবং ভারতের এ গাছের নাম সুন্দরী হিসেবে ডাকা হয়। সুন্দরবনের প্রায় ৭০% এলাকাজুড়ে সুন্দরী গাছের আধিপত্য রয়েছে।

সুন্দরী গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হল- Heritiera fomes. 

এটি হলো সুন্দরবনের সুন্দরী গাছের বৈজ্ঞানিক নাম। এছাড়া সুন্দর বনে প্রধান গাছপালা গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো গেওরা, গড়ান, পশুর, বাইন, হেতাল, গোলপাতা, খামু, সুন্দরী, কেওড়া কাঁকড়া আমুর, ওড়া ইত্যাদি আরো অনেক প্রজাতির গাছ রয়েছে। সবগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম জানা সম্ভব নয়। তাই সুন্দরবনের প্রধান গাছ এর বৈজ্ঞানিক নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

সুন্দরবনের প্রাণীর নাম

সুন্দরবন হলো আমাদের জাতীয় বন। সুন্দরবন হলো পৃথিবীর একমাত্র ম্যানগ্রোভ বন। যার বেশির ভাগ অংশ বাংলাদেশে অবস্থিত। সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী বসবাস করে। ইতিমধ্যে আমরা সুন্দর বনের আয়তন কত? সুন্দরবন সম্পর্কে অনেকগুলো তথ্য জানতে পেরেছি এখন আমরা সুন্দরবনের প্রাণীর নাম সম্পর্কে জানব।

আরো পড়ুনঃ বাংলা লেখালেখি করে আয় করার ওয়েবসাইট পেমেন্ট বিকাশে

সুন্দরবনের প্রাণী ৫০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী, ৫০ প্রজাতির সরীসৃপ, ৩২০ প্রজাতির পাখি, ৮ প্রজাতির উভচর এছাড়া শত শত প্রজাতির মাছ রয়েছে। সুন্দরবনের বিভিন্ন রকম প্রাণী বসবাস করে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো-

  • রয়েল বেঙ্গল টাইগার
  • হরিণ
  • বানর
  • হাতি
  • গন্ডার
  • মৌমাছি
  • কুমির
  • হাঙ্গর
  • শজারু
  • শেয়াল ইত্যাদি

এছাড়াও সুন্দরবন এ আরো অসংখ্য প্রজাতির প্রাণী রয়েছে সবগুলোর মধ্যে উল্লেখিত নামগুলো উল্লেখযোগ্য। তাই এই নামগুলো আমরা উপরে উল্লেখ করলাম। আশা করি আপনি সুন্দরবনের প্রাণের নাম সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

সুন্দরবনের মাটি কেমন

বন্ধুরা আপনারা ইতিমধ্যে আমাদের এই পোস্ট থেকে সুন্দরবন সম্পর্কে অনেকগুলো তথ্য জানতে পেরেছেন। তার মধ্যে সুন্দর বনের আয়তন কত? সুন্দরবনের প্রাণী ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এখন আমরা সুন্দরবনের মাটি কেমন এ সম্পর্কে জানব।

বাংলাদেশের ভেতরকার তুলনায় সুন্দরবনের মাটি একটু অন্য ধরনের। এখানে নিয়মিত জোয়ার ভাটা হয় তার কারণে এখানকার পানিতে জলাবদ্ধতা ও লবণাক্ততা বেশি থাকে। তাই সুন্দরবনের মাটি পলি যুক্ত দোআঁশ।

সুন্দরবনের অর্থনৈতিক গুরুত্ব

বাংলাদেশের অর্থনৈতিকতে সুন্দরবনের গুরুত্ব রয়েছে অনেক। সুন্দরবন থেকে প্রাপ্ত কাঠ জ্বালানি ও কাঠ কয়লা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া সুন্দরবন এর ফল গো খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সুন্দরবনের থাকা গোল পাতা শুকিয়ে গেলে তা ঘরের চাল তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া সুন্দরবন থেকে অসংখ্য প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়। বিশেষ করে সুন্দরবনে মধু উপর বেশি নির্ভরশীল।

সুন্দরবন থেকে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়। এই মধুর ওপর নির্ভর করে কিছু মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময় পর্যটন স্পট গুলোতে প্রতিবছর অসংখ্য মানুষ সুন্দরবন এ ঘুরতে যাই। এতে করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লাভবান হয়। সুন্দরবনের অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।

আরো পড়ুনঃ টাকা আয় করার ওয়েবসাইট - টাকা ইনকাম করার সহজ উপায়

জ্বালানি, কাঠ মধু ও মম, গোলপাতা, চিংড়ি ও চিংড়ি পোনা, কাঁকড়া সাত প্রকার জিনিসের থেকে প্রতি বছর প্রায় ১,১৬১ কোটি টাকা অর্থনৈতিক সম্পদ অর্জন করা যায় সুন্দরবন থেকে। তাহলে এখান থেকে বুঝা যাচ্ছে যে সুন্দরবন থেকে কি পরিমান অর্থনৈতিক লাভবান হয় বাংলাদেশ। সুন্দরবনের পর্যটন খাত থেকে বছরে আয় হয় প্রায়ই ৪১৪ কোটি টাকা।

সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা এতক্ষন আমাদের সঙ্গে আছেন তার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আমরা প্রায়ই আমাদের পোস্টের শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। এখন আমরা সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানব। তাহলে চলুন সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা কি তা জেনে নেই।

সর্বশেষ জরিপে সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা জানানো হয় যেখানে সুন্দর বনে বাঘ রয়েছে ১০৬ টি।সুন্দরবনের হরিণ রয়েছে প্রায়ই এক লক্ষের বেশি। এছাড়া সুন্দরবনের রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। প্রায় ২৯০ প্রজাতির পাখি রয়েছে সুন্দরবনের, ৪৫৩ টি প্রজাতির প্রাণী রয়েছে সুন্দরবনে। এবং সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে।

উপসংহারঃ সুন্দর বনের আয়তন কত - সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা ইতিমধ্যে সুন্দর বনের আয়তন কত? সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা এছাড়া আরো অনেক তথ্য জানতে পেরেছেন। আপনি যদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে ইতিমধ্যে আপনি সুন্দরবনের তথ্য সম্পর্কে জেনে গিয়েছেন। আশা করি আপনি আমাদের পোষ্ট থেকে উপকৃত হয়েছেন। আপনার এবং আপনার পরিবারের সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই শেষ করছি ধন্যবাদ।২০৮৭৬

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post